চাঁদপুর সকাল

চাঁদপুরে গৃহবধূ আত্মহত্যার ঘটনায় স্বামী আটক : কারাগারে প্রেরণ

৫ মাস আগে
চাঁদপুরে গৃহবধূ আত্মহত্যার ঘটনায় স্বামী আটক : কারাগারে প্রেরণ
চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের ফরিদগঞ্জ সড়কের চাঁদপুর সেতুর পূর্ব পাশে ঘটে যাওয়া গৃহবধূ জান্নাত আক্তারের আত্মহত্যার ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন জান্নাতের বাবা অটোচালক মোঃ সেকান্তর তপদার। সেই মামলায় গত ৮ জুলাই মঙ্গলবার রাতে এজহার ভুক্ত আসামী জান্নাতের স্বামী সজল মোল্লাকে আটক করেছে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার সজল মোল্লাকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত প্রায় ৩ বছর পূর্বে চাঁদপুর নির্বাচন অফিসের পূর্ব পাশ এলাকার নাছির মোল্লার ছেলে সজল মোল্লার সাথে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক সামাজিক ভাবে জান্নাতের বিয়ে দেই। তাহাদের দাম্পত্য জীবনে ২০ মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিবাহের পর হইতে বিবাদী সজল মোল্লা আমার মেয়ে জান্নাত আক্তার (১৯) এর সহিত পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদী নিয়ে অপমান জনক কথাবার্তা সহ মানসিকভাবে নির্যাতন করতো বিধায় আমরা একাধিক বার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদেরকে নিয়া বিচার শালিস করে মিমাংসা করিয়া দেই। গত সপ্তাহের (৮ জুলাই) মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে তাদের ভাড়া বাসায় আমার মেয়ের সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ সহ অপমান জনক কথাবার্তা বলে। স্বামী সজল মোল্লার অত্যাচার ও অপমান জনক কথাবার্তা সহ্য করিতে না পেরে এদিন বিকাল ৪টা ৫টার মধ্যে দক্ষিণ তরপুরচন্ডী নির্বাচন অফিসের পূর্ব পাশে লোকমান দেওয়ান এর ভাড়া বাসায় সকলের অগোচরে ঘরের আড়ার সাথে তার পড়নের উড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগাইয়া ভিকটিম জান্নাত আক্তার আত্মহত্যা করে। পরে এদিন বিকাল সোয়া ৫টার সময় অচেনা নম্বর থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি জান্নাতে বাবা সেকান্তরকে জানায়। মেয়ের আত্মহত্যার খবর পেয়ে পরিবার ও বাড়ির লোকজনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন তার মেয়ে ভিকটিম জান্নাত আক্তার এর মৃত দেহ চাদর দিয়ে ঢাকা অবস্থায় মাটিতে পরে আছে। বিবাদী সজল মোল্লা (২৯) তার স্ত্রীকে মানসিক নির্যাতন করে বলে দাবী করেন জান্নাতের বাবা।


এছাড়াও সজল মোল্লা বিভিন্ন সময় মাদকাসক্ত হয়ে জান্নাতের উপর ব্যাপক নির্যাতন করেছে। তিনি আরো জানান, বিয়ের পর থেকেই তীব্র ঝগড়া, অপমান আর বিষন্নতা পিছু ছাড়েনি জান্নাতের। বারবার ঠিকঠাক করার চেষ্টা, কখনও থানায় অভিযোগ, কখনও বাবার বাড়িতে ফিরে যাওয়া। তারপর আবার স্বামীর অনুরোধে ফিরে আসা। কিন্তু সম্পর্কের ফাটলগুলো আর জোড়া লাগেনি। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার বিকেলে আবার ঝগড়া হয় দুজনের মধ্যে। সজল বাসা থেকে বেরিয়ে গেলে ফিরে এসে ঘরের আঁড়ার সাথে গলায় রশি দিয়ে ঝুলতে দেখা যায় গৃহবধূ জান্নাত বেগমকে। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে স্থানীয় তিন যুবকের সহায়তায়। কিন্তু ততক্ষণে জান্নাত বেগমের মৃত্যু হয়ে যায়। এ বিষয়ে জান্নাতের পরিবার মনে করে, এই মৃত্যু আত্মহত্যা নয় বরং দীর্ঘ নির্যাতনের পরিণতি। তারা সরাসরি সজলকে দায়ী করেছে।


জান্নাত আক্তারের বাবা সেকান্তর তপদার আরো বলেন, তার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর তার সুখের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময় যৌতুক হিসেবে বিভিন্ন আসবাবপত্র, ফ্রিজ, দোকান দেওয়ার সময় প্রায় এক লক্ষ টাকা দেয়া হয়। এছাড়াও স্বজল মোল্লা বিদেশ যাওয়ার সময় দুই লক্ষ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন জান্নাতের পরিবার।