চাঁদপুর সকাল

চান্দ্রায় সেপটিক ট্যাংকির গ্যাসে সুইপারের মৃত্যু ॥ অবহেলা না খুন!

৫ মাস আগে
চান্দ্রায় সেপটিক ট্যাংকির গ্যাসে সুইপারের মৃত্যু ॥ অবহেলা না খুন!
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২ নং চান্দ্রা ইউনিয়নের চৌরাস্তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে নেমে সুমন নামে এক সুইপারের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই ২০২৫) বিকেলে চান্দ্রা চৌরাস্তা দেলোয়ার পাটোয়ারীর দোকানে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

নিহত সুইপার সুমনের বাড়ি চাঁদপুরের দক্ষিণে হায়দারগঞ্জ নদীর পাড় এলাকায়। সন্ধ্যার সময় খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এবং চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে সেপটিক ট্যাংক থেকে সুইপারের মরদহ উদ্ধার করে।


জায়গাটা ছিল দেলোয়ার পাটোয়ারির মার্কেট। বাইরে থেকে যতটা ঝকঝকে দেখায়, ভিতরে ততটাই ভয়াবহ বাস্তবতা। নিয়ম না মেনে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, আর ভিতরেই বসানো হয়েছে সেফটি ট্যাংকি যার গ্যাস বের করার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। দেলোয়ার, একজন মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক, পাশাপাশি বিক্রি করেন রড, সিমেন্ট ও কীটনাশক। তাঁর মার্কেটের এই অব্যবস্থাপনার বলি হতে হলো সুমনকে। ঘটনার রাতে, দেলোয়ারের কথামতো সুমন নামেন সেই বদ্ধ সেফটি ট্যাংকিতে। ভিতরে জমে থাকা মিথেন গ্যাসে দম বন্ধ হয়ে যায়, মুহূর্তেই নিথর হয়ে পড়েন তিনি।


ফায়ার সার্ভিস এসে অনেক চেষ্টায় মৃতদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ আসে, তদন্ত শুরু হয়। সুমনের স্ত্রী, সহকর্মী ও দেলোয়ারকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।


স্থানীয়রা বলছেন, ভবনের ভিতরে সেফটি ট্যাংকি বসানোই ছিল এই মৃত্যুর মূল কারণ। নিয়ম ছিল বাইরে রাখার, কিন্তু উপেক্ষা করা হয়েছে সব নিরাপত্তা বিধি। ভিতরটা ভাবুন একবার একটা অন্ধকার, স্যাঁতসেঁতে ঘর, দেয়ালে জমে থাকা গ্যাসের গন্ধ, নিঃশ্বাস নিতে না পারা এক প্রহেলিকা। সুমনের জন্য সেটা ছিল আর্তনাদের শেষ ঘর।


স্থানীয়রা জানান, চান্দ্রা চৌরাস্তার ব্যবসায়ী দেলোয়ার পাটোয়ারীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতর একটি সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে সুইপার সুমন কাজ নেন। শেষ বিকেলের দিকে ওই সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে নামেন সুমন। পরিষ্কার করা অবস্থায় সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে বিষাক্ত (মিথেন) গ্যাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এতে তার মৃত্যু হয়।